
টাঙ্গুয়ার হাওর ভারতের মেঘালয়ের খাসিয়া, জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে পাখিদের কলকাকলিতে মুখরিত বাংলাদেশের এক বিশাল শীতল জলাভূমির নাম। নয়কুড়ি কান্দার ছয়কুড়ি বিল নামেও পরিচিত এই টাঙ্গুয়ার হাওর। এই হাওড় বাংলাদেশের অন্যতম মিঠাপানির জলাভূমি যা আন্তর্জাতিকভাবেও বহুল সমাদৃত। বৃহত্তর সিলেটের সুনামগঞ্জ জেলায় এই হাওরের অবস্থান। প্রায় ১০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে এর বিস্তৃতি। এই হাওরে প্রায় ৪৬টি গ্রাম রয়েছে। বর্ষায় হাওরের সব কিছু ডুবে যাওয়ায় এই গ্রাম গুলোকে তখন দ্বীপ গ্রাম বলেই মনে হবে। টাঙ্গুয়ার হাওরে ২৮০২.৩৬ হেক্টর এলাকা জলাভূমি। হাওর থেকে যে দৃষ্টি নন্দন পাহাড়গুলো দেখা যায় সেগুলোর অবস্থান ভারতের মেঘালয়ে। সেখান থেকেই নেমে আসা ছোট বড় প্রায় ৩০ ঝর্ণা এসে মিশেছে টাঙ্গুয়ার হাওরে। টাঙ্গুয়ার হাওর ( Tanguar Haor ) মাছ, পাখি এবং অন্যান্য জলজ প্রাণী এবং জলজ উদ্ভিদের এক বিশাল অভয়াশ্রম। ১৯৯৯ সালে গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার টাঙ্গুয়ার হাওরকে ECA (Ecologically critical Area) হিসেবে ঘোষনা করে এবং ২০০০ সালের ২০ জানুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওরকে ২য় ‘রামসার স্থান’ (Ramsar site) হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এ হাওর দেশী মাছের আধার, এ হাওর দেশের একটি মাদার ফিশারী। টাঙ্গুয়ায় হাওরের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে হলে আপনাকে অবশ্যই এখানে আসতে হবে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে কখন আসবেন
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের সব চাইতে উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। ভারতের মেঘালয় থেকে বয়ে আসা পানিতে হাওর কানায় কানায় পূর্ণ থাকে। তখন হাওরের বিশালতা আপনাকে ভীষণ ভাবে মুগ্ধ করবে। মনে হবে কোন এক সাগরে এসে পড়েছেন আপনি। বর্ষা ছাড়াও শীতে চলে আসতে পারেন হাওর ভ্রমণে দিগন্ত জোড়া সবুজ মাঠ। যতদূর চোখ যাবে শুধু সবুজ আর সবুজ। হাওরের মাঝ দিয়ে সাপের মত এঁকে বেঁকে চলা নদী, এবং সূদুর সাইবেরিয়া থেকে উড়ে আসা অতিথি পাখি আপনাকে বিমোহিত করবে। শীতে শিমুল ফুল ফোটে বলে হাওরের শিমুল বাগান তখন রক্তিম আভা ধারণ করে।
টাঙ্গুয়ার হাওরে কিভাবে আসবেন
ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ হয়ে টাঙ্গুয়ার হাওর
টাঙ্গুয়ার হাওর আসতে হলে আপনাকে প্রথমে আসতে হবে সুনামগঞ্জ শহরে। ঢাকা থেকে সড়ক পথে সুনামগঞ্জ আসতে পারবেন। ঢাকার সায়দাবাদ থেকে প্রতিদিন শ্যামলী এন আর, শ্যামলী এস পি, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, মামুন পরিবহনের নন এসি বাসগুলো সুনামগঞ্জের উদ্দ্যেশ্যে ছেড়ে আসে। এই রুটে নন এসি বাস ভাড়া ৮০০ টাকা। মহাখালী, এয়ারপোর্ট, আব্দুল্লাহপুর থেকে ছেড়ে আসে এনা পরিবহন। এনা পরিবহনের এসি বাস এবং নন এসি বাস দুইই আছে। এই রুটের নন এসি বাসে ভাড়া ৮০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ১২০০ টাকা। সুনামগঞ্জ শহর থেকে লেগুনা, সি এন জি অথবা বাইকে করে চলে আসুন তাহিরপুর বাজার, এই বাজারের ঘাট থেকেই হাওর ভ্রমণের জন্য ইঞ্জিন চালিত বোট পেয়ে যাবেন।
টাঙ্গুয়ার হাওরের দর্শনীয় স্থান সমূহ
ট্যাকের হাট
ট্যাকের হাট ভারত বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী একটি বাজার। টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে যারা আসেন তারা একবার হলে বেড়িয়ে যান ট্যাকের হাটে। ট্যাকের ঘাটে নৌকা নোঙ্গর করার পর বিকেলের সময়টা সবাই এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়। সন্ধ্যা বেলায় হালকা খাবার বা ভাজা পোড়া খেতে সবাই ভিড় জমায় ট্যাকের হাটে। ট্যাকের ঘাট থেকে ০৩-০৪ মিনিটের হাটার দুরুত্বে এই বাজারের অবস্থান। যারা বাজেট ট্যুরে আসেন তারা ট্যাকের হাটে কম দামে ভালো মানের খাবার পেয়ে যাবেন।
লাকমা ছড়া
টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরতে আসলে যে জায়গাটিতে যেতে একদম ভূলবেন না সেটি হচ্ছে লাকমা ছড়া। পাহাড়ের ভাঁজে ভাঁজে সবুজের আস্তরন। এই সবুজ আস্তরনের বুক বেয়ে নেমে এসেছে এক ঝর্ণা, যার নাম লাকমা। এই ঝর্নাটি ভারত বাংলাদেশ সীমান্তে। লাকমা ঝর্ণাটি বাংলাদেশ থেকে দেখা যায়না। লাকমা ঝর্ণার পানিগুলো বাংলাদেশে বয়ে আসে। লাকমা ঝর্ণার পানি গিয়ে পড়ে টাঙ্গুয়ার হাওরে। যে পথ দিয়ে পানি গিয়ে হাওরে পড়ে তাকে বলে লাকমা ছড়া। ছড়ার শীতল জল আপনাকে প্রনবন্ত করবে। ছড়ায় বড় বড় পাথর ছড়ার সৌন্দর্যকে কয়েক গুন বৃদ্ধি করেছে। ট্যাকের ঘাটে নৌকা থেকে নেমে একটা অটো বা মোটর সাইকেল নিয়ে লাকমা ছড়ার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চলে যেতে পারেন।
ওয়াচ টাওয়ার
হাওরকে অন্যভাবে উপভোগ করতে অবশ্যই উঠবেন ওয়াচ টাওয়ারে। ছুটির দিন গুলোতে বেশ ভিড় থাকে টাঙ্গুয়ার হাওরের ওয়াচ টাওয়ারে। বলাই নদীর পাশ ঘেঁসে হিজল বনে ওয়াচ টাওয়ারের অবস্থান। প্রায় সব নৌকা একবারের জন্য হলেও ওয়াচ টাওয়ারের পাশে যায়। ওয়াচ টাওয়ারের আশে পাশের পানি বেশ স্বচ্ছ। পানি স্বচ্ছ বলে ঘুরতে আসা বেশিরভাগ পর্যটকই এইখানে গোসল সেরে নেন। এইখানে পানিতে নেমে চা খাওয়ার আছে বিশেষ সুযোগ। ছোট ছোট নৌকায় করে হাওরের স্থানীয় লোকজন চা, বিস্কুট বিক্রয় করে। আপনি চাইলে বড় নৌকা থেকে নেমে ছোট ছোট নৌকা দিয়ে ঘুরতে পারবেন এইখানে, শুনতে পারবেন মাঝির সুমধুর কন্ঠে হাওর বাঁচানোর গান।
নীলাদ্রি লেক
নীলাদ্রি লেক এইখানে মানুষদের কাছে পাথর কুয়ারি নামে পরিচিত। এই লেকটি এবং তার আশ পাশের এলাকা বাংলার কাশ্মীর নামেও পরিচিত। নীলাদ্রি লেকের বর্তমান নাম “শহীদ সিরাজী লেক” । বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ গেরিলা যোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম বির বিক্রম এর নামানুসারে এই লেকের নামকরন করা হয়। কিন্তু ট্রাভেলার কমিউনিটিতে এটি নীলাদ্রি লেক হিসেবেই বেশী পরিচিত। এই লেকের পানি খুব স্বচ্ছ। নৌকায় করে ঘুরে বেড়াতে পারবেন এই লেকে। আরো আছে কায়াকিং এর বিশেষ ব্যাবস্থা। ক্লান্তি দূর করার জন্য স্বচ্ছ ঠান্ডা লেকের জলে স্নান করে নিতে পারবেন। লেকের এক পাশ সবুজ ঘাসের চাদরে মোড়ানো ছোট ছোট বেশ কয়েকটি টিলা। আর অন্য পাশে রয়েছে সুউচ্চ সুবিশাল পাহাড়। পাহাড়, টিলা, লেকের স্বচ্ছ পানি প্রকৃতির এই সুন্দর মিতালী আপনাকে বিমোহিত করবে। এইখানে এসে আপনি হারিয়ে যেতে বাধ্য। ট্যাঁকের ঘাটে নৌকা থেকে নেমে সোজা হেঁটে চলে আসতে পারবেন নীলাদ্রি লেকে। পড়ন্ত বিকালের সময়টুকু কাটতে পারেন লেকের পাড়ের ঘাসের চাদরে বসে। অথবা প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে করতে পারেন লেকের জলে নৌকা ভ্রমণ অথবা করতে পারেন কায়াকিং।
জাদুকাটা নদী
জাদুকাটা নদীর আদি নাম রেনুকা। কথিত আছে জাদুকাটা নদী পাড়ে বসবাস কারি কোন এক বধু তার পুত্র সন্তান জাদুকে কোলে নিয়ে নদীর অনেক বড় একটি মাছ কাটছিলেন। হঠাৎ অন্যমনস্ক হয়ে নিজের সন্তান জাদুকেই কেটে ফেলেন। এই কাহিনী থেকেই পরবর্তীকালে এই নদীর নাম হয় জাদুকাটা নদী। এ নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের জৈন্তিয়া পাহাড়। এ নদীর পানি অনেক ঠান্ডা, দুপুরের গেলে নঈতে ডূব দিতে একদম ভূলবেন না। তবে নদীর মাঝে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না। মাঝে অনেক স্রোত থাকে। জাদুকাটার এক পাশে সুবিশাল পাহাড় উপরে নীল আকাশ আর নদীর স্বচ্ছ পানি এইগুলো মিলে অদ্ভূত এক ক্যানভাসের সৃষ্টি করে।
শিমুল বাগান
এটি বাংলাদেশের সব চাইতে বড় শিমুলা বাগান। এ বাগানে প্রায় ৩০০০ শিমুল গাছ রয়েছে। প্রায় ১০০ বিঘা জায়গা জুরে এই শিমুল বাগানের বিস্তৃতি। বসন্ত কালে শিমুল ফুলের রক্তিম আভা আপনার মনকে রাঙ্গিয়ে দিবে। শিমুল বাগানের অপর পাশে মেঘালয়ের সুবিশাল পাহাড় মাঝে সচ্ছ নীল জলের নদী জাদু কাটা আর এই পাশে রক্তিম শিমুল ফুলের আভা আপনার মন নেচে উঠবে। শিমুল বাগানে প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। শিমুল বাগানের নিচেই নৌকা আসে। নৌকা না আসলে ট্যাকের ঘাট থেকে বাইক নিয়ে ঘুরে যেতে পারবেন শিমুল বাগান।
বারিক্কা টিলা
মেঘালয়ের পাহাড়ের পাদদেশে সীমান্তের এই পাশে সবুজে মোড়ানো এক টিলার নাম বারেকের টিলা বা বারিক্কা টিলা। উঁচু এই টিলার একপাশে ভারতের সুউচু পাহাড়, অন্য পাশে স্বচ্ছ জলের নদী জাদুকাটা। বারিক্কা টিলা থেকেই দেখতে পারবেন মেঘ পাহাড়ের মিলবন্ধন। বারিক্কা টিলার উপর থেকে জাদুকাটা নদীর দিকে তাকালে আপনি যে নৈসর্গিক দৃশ্য দেখতে পারবেন তার রেশ থেকে যাবে বহুদিন। বারিকা টিলার পাশে দুইটি মিষ্টি পানির ছড়া রয়েছে। বর্ষাকাল ছাড়া এই ছরাগুলো পানি থাকে না বললেই চলে। ছড়া গুলো দেখতে খানিকটা ট্র্যাকিং করতে হবে। এছাড়াও ভারতের পাহাড়ে রয়েছে শাহ্ আরেফিনের মাজার এবং রয়েছে একটি তীর্থ স্থান। বছরের নির্দৃষ্ট দিনে এইখানে ওরস এবং পূণ্য স্নানের আয়োজন হয়। বারিক্কা টিলার পাশেই জাদুকাটা নদী। এ নদী দিয়েই নৌকায় করে আসতে পারবেন। কিন্ত নৌকা না আসলে ট্যাকের ঘাট থেকে বাইক বা ইজি বাইক চলে আসতে পারবেন বারিক্কা টিলায়।
হিজল বন
টাঙ্গুয়ার হাওরের হিজল বনটি দেশের সবচাইতে পুরানো হিজল বন। বলাই নদীর পাশেই আছে এই হিজল বন। হাওরের মাছ ও পাখির অভয়াশ্রম এই হিজল বন। টাঙ্গুয়ার হাওরে আছে শতবর্ষীয় হিজল গাছ। বর্ষায় গলা সমান পানিতে ডুবে থাকা গাছে গাছে ঝুলে থাকা হিজল ফুলের সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবে।
এছাড়াও রয়েছে
হাসন রাজার যাদুঘর
সুনামগঞ্জ শহরের সুরমা নদীর ঠিক পাশেই রয়েছে মরমী কবি হাসন রাজার বাড়ি। হাসন রাজা একজন সম্ভ্রান্ত জমিদার ছিলেন। জমিদারির পাশাপাশি তিনি অসংখ্য গান রচনা করেছিলেন। সে সকল গান এখনো জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। বর্তমানে সুনামগঞ্জের হাসন রাজার বাড়িটি যাদুঘর হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। এই যাদুঘরে হাসন রাজার স্মৃতি বিজড়িত অনেক জিনিসপত্র আছে। এইখানে আসলে আপনি দেখতে পাবেন মরুমী কবি হাসন রাজার রঙ্গিন আলখাল্লা, তিনি যেই চেয়ারে বসে গান রচনা করতেন সেই চেয়ার। তার ব্যবহৃত তলোয়ার। আরো আছে চায়ের টেবিল, কাঠের খড়ম, দুধ দোহনের পাত্র, বিভিন্ন বাটি, পান্দানি, পিতলের কলস, মোমদানি, করতাল, ঢোল, মন্দিরা, হাতে লেখা গানের কপি, ও হাসন রাজার বৃদ্ধ বয়সের লাঠি। টাঙ্গুয়ার হাওর থেকে ফেরার পথে ঘুরে যেতে পারবেন হাসন রাজার যাদুঘর।
ডলুরা শহীদদের সমাধি সৌধ
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে ডলুরা ছিল সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তবর্তী এলাকার অন্যতম রণাঙ্গন। এই রণাঙ্গনে সম্মুখ যুদ্ধে যারা শহীদ হন তাদের কয়েকজনকে এইখানে সমাহিত করা হয়। ১৯৭৩ সালে শহীদদের স্মরনে এইখানে স্মৃতি সৌধ নির্মান করা হয়। এইখানে ৪৮ জন শহীদের সমাধি রয়েছে। সুউচু পাহাড়ের পাদদেশে লুকিয়ে আছে ১৯৭১ এর রক্তাত্ত সংগ্রামের স্মৃতি চিহ্ন।
পাইলগাঁও জমিদারবাড়ি
সাড়ে পাঁচ একর জমির উপর ৩০০ বছর আগে তৈরি করা হয় পাইলগাও জমিদার বাড়ি। কালের পরিক্রমায় ক্ষয়ে যাওয়া জমিদার বাড়িটি আজও সৌন্দর্য, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যের ধারক। এই জমিদার বাড়ির অবস্থান সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার ০৯নং ইউনিয়নে। এই জমিদার বাড়ির প্রতিটি ঘর যেন এক অন্যরকম নান্দনিক স্থাপত্য শিল্পের সাক্ষী হয়ে আজো বিদ্যমান রয়েছে। পাইলগাও জমিদার বাড়ি প্রাচীন পুরাকীর্তির এক অনন্য নিদর্শন।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে সঙ্গে যা যা রাখবেন
ব্যাগ, গামছা, ছাতা, মশার হাত থেকে বাঁচতে ওডোমস ক্রিম, টুথপেষ্ট, সাবান, শ্যম্পু, সেন্ডেল, ক্যামেরা, ব্যাটারী, চার্জার, সানক্যাপ, সানগ্লাস, সানব্লক, টিস্যু, ব্যক্তিগত ঔষধ, লোশন, চার্জের জন্য পাওয়ার ব্যাংক, ব্যাটারি ব্যাকআপ সহ টর্চ, কোভিড ১৯ মোকাবিলায় মাস্ক, এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার সঙ্গে রাখবেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য এবং সতর্কতা
- টাঙ্গুয়ার হাওর আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষার দায়িত্বও আমাদের সকলের।
- টাঙ্গুয়ার হাওরে বেশকিছু জলাবন রয়েছে। এমন কিছু করবেন না যাতে এই বনের ক্ষতি হয়।
- বোটে উঠেই আপনার লাইফ জ্যাকেটটি বুঝে নিবেন। যদি বোটে লাইফ জ্যাকেট না থাকে তাহলে বাজারে ভাড়া পাওয়া যায়, সেখান থেকে সংগ্রহ করে নিবেন।
- খরচ কমাতে চাইলে গ্রুপ ভিত্তিক ভ্রমণ করুন।
- বজ্রপাতের সময় বোটের ছাদে যাওয়া থেকে বিরিত থাকুন।
- যাদুকাটা নদীতে সাতার জানলেও কোনভাবেই লাইফ জ্যাকেট ছাড়া নামবেন না। জাদুকাটা নদীর তলদেশে তীব্র স্রোত থাকে যা উপর থেকে বুঝা যায় না।
- হাওরের মাছ, বন্যপ্রানী এবং পাখি শিকার থেকে বিরত থাকুন।
- অতি উচ্চ শব্দ সৃষ্টি করে এমন ধরনের ডিভাইস ব্যবহার থেকে থাকুন।
- হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য এবং জীব বৈচিত্র রক্ষার জন্য কোন ধরনের অপচনশীল দ্রব্য হাওরের পানিতে ফেলবেন না। ( যদিও এই কাজটিই আমরা সব চাইতে বেশী করি। )
- টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমনে আসার আগে অবশ্যই আপনার পছন্দের হাউজ বোটটি বুকিং করে আসবেন।
টাঙ্গুয়ার হাওর ডে লং কর্পোরেট ট্যুর প্যাকেজ । তাহিরপুর টু টাঙ্গুয়ার হাওর টু তাহিরপুর।
Call: +880 1711336825, 01402288573, 01678076361-69
অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করুন হাওরের আমাদের সবচেয়ে সুন্দর হাউস বোটের সাথে!
আড্ডা, গানবাজনা ও বিনোদনের সুযোগ
কাস্টমাইজ ট্যুরের সুযোগ
Package Price 4,000 BDT to 5,000 BDT Perperson (Depends on Boat Size Quality & Journey Date)
Tour Duration: Day Long
Team Size Minimum 10 to 20 Person
ভ্রমণস্থান গুলো যেগুলো আমরা ঘুরে দেখাবো:
প্যাকেজে যা যা থাকবে :












প্যাকেজে যা যা থাকবেনা:
Food Menu
- Breakfast (8:00 AM) – Chicken Bhuna Khichuri, Fried Egg, Peyaj & Kacha Morich Bhorta, Salad, Water & Tea
- Snacks (11:00 AM) – Cake, Biscuits & Tea
- Lunch (2:00 PM) – Plain Rice, Bhorta, Local Duck Bhuna, Local Fish Chorchori, Ghono Dal, Salad & Water
- Snacks (6:00 PM) – Egg Noodles & Tea
ভ্রমণ পরিকল্পনা
সম্মানিত অতিথি, আপনাকে বরণ করতে তাহিরপুর ঘাটে সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত থাকবে আমাদের হাউজবোট । কেবিনের সাথে ওয়াশরুম সুবিধা আছে, তাই চেকইন শেষে ফ্রেশ হয়ে চলে আসবেন লবিতে। সেখানেই পরিবেশন করা হবে সকালের নাস্তা। এর মাঝে বোট চলতে শুরু করবে হাওরের উদ্দেশ্যে।
পরিকল্পনা অনুযায়ি প্রথম গন্তব্য হবে ওয়াচ টাওয়ার। সেখান থেকে পাখির চোখে হাওরের নয়ানাভিরাম সৌন্দর্য উপভোগ, স্বচ্চ নীল জলে গোসল, ছোট ডিঙ্গি নৌকায় চড়ে হিজলের বন, করচ বন ঘুরে বোটে এসে দুপুরের খাবার ।
পরবর্তী গন্তব্য টেকের ঘাট, সেখান থেকে ইজিবাইকে লাকমাছড়া আবার লকমাছড়া থেকে শহীদ সিরাজি লেক (নীলাদ্রি লেক)। পড়ন্ত বিকেল বেলায় লেকের পাশে পাহাড়ি টিলায় বসে বোটের সবাই মিলে একসাথে আড্ডা দিবেন ।
পরবর্তী গন্তব্য টেকের ঘাট থেকে যাদুকাটা নদী দিয়ে শিমুল বাগানের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হবে, যাত্রা পথেই সকালে নাস্তা পরিবেশন করা হবে।
অনিন্দ্য সুন্দর পাহাড়ি নদী যাদুকাটা ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সারি সারি দ্বাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে পোঁছে যাবেন শিমুল বাগান।
পরবর্তী গন্তব্য হবে বারিক্কা টিলা। বারিক্কা টিলা থেকে মেঘালয় রাজ্যের খাসিয়া পাহাড়ে তাকালে যে নৈস্বর্গিক দৃশ্যের দেখা মিলবে, ভ্রমণ শেষে দীর্ঘ দিন তাঁর রেশ থেকে যাবে আপনার মনে। পাহাড়ি নদী যাদুকাটা থেকে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বালু ও পাথর সংগ্রহের কর্মব্যস্ত দৃশ্য আপনাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করবে।
তারপর নীল স্বচ্ছ জলের পাহাড়ি নদী যাদুকাটায় গোসল, এমন সুন্দর প্রকৃতিক মনোরম পরিবেশে নদীতে নামার লোভ কেউ সামলাতে পারে না। সাঁতার জানা না থাকলে অবশ্য হাউজবোটে গোসল সেরে নিবেন। গোসল শেষে তাহিরপুরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু হবে। চলার পথে দেওয়া হবে দুপুরের খাবার। সন্ধ্যা নামার সাঙ্গে সঙ্গে বোট আসবে তাহিরপুর।